শেরপুর প্রতিনিধি : শেরপুরের শ্রীবরদীতে লোনা চিরান (৩০) নামে এক আদিবাসী নারীর বাড়ীতে হামলা করে মারপীট, ভাংচুর ও লুটপাটের অভিযোগ ওঠেছে। ঘটনাটি ঘটে উপজেলার সীমান্তের আদিবাসী এলাকা হারিয়াকোনা টিলাপাড়া গ্রামে। এ ঘটনায় ওই নারী বাদী হয়ে বিজ্ঞ সিআর আমলী আদালতে একটি মামলা দায়ের করায় ওই নারীর সুপারি বাগান জবর দখলসহ প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে। এতে আতংকে দিন কাটাচ্ছেন লোনা চিরানসহ তার পরিবার। শুক্রবার সরেজমিন গেলে ভুক্তভোগী ওই পরিবারসহ স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে ওঠে আসে এমন তথ্য।
লোনা চিরানের মামলা সূত্রে জানা যায়, হারিয়াকোনা টিলাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মৃত ফিলিপ ম্রংয়ের মেয়ে লোনা চিরান। তিনি বংশানুক্রমে বন বিভাগের পরিত্যক্ত একটি পাহাড়ি টিলায় ছেলে মেয়ে নিয়ে দু”চালা একটি টিনের ঘরে বসবাস করে আসছেন। তাদের বসত ঘরের পাশেই একটি রান্না ঘর। এছাড়াও প্রায় এক একর জমিতে সুপারি, লটকন ও কাঠাল গাছের বাগান করেন। এসব গাছের ফল বিক্রি করে সংসার চালান তারা। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর গত ৮ আগষ্ট সকাল ১১ টার দিকে তার প্রতিবেশী মৃত হোসেন আলীর ছেলে রিলিপ ম্রং (৫৮), চিরুপায় ম্রংয়ের ছেলে আলীশান চিরান (৫২) ও রিলিপ ম্রংয়ের ছেলে মার্জেস ম্রং (২৫) সহ ২০ হতে ২৫ জন তার বাড়িতে হামলা চালায়। হামলাকারীরা তার বাড়ি ভাংচুর ও লুটপাট করে বাড়ির সব মালামাল নিয়ে যায়।
এ সময় তার সুপারির গাছের ফাঁকে ফাঁকে রোপপনকৃত সবজি চারা নষ্ট করে করে। লোনা চিরা ও তার পরিবারের সদস্যরা বাঁধা গেলে প্রতিপক্ষ তাদের ওপর হামলা করে। এতে গুরুতর আহত হন লোনান চিরান, তার বৃদ্ধ মা নিরূপমা চিরান, মামী কলেতা চিরান ও সমিত্রা চিরান। পরে স্থানীয়রা তাদের ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে উপজেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। এ ঘটনার সুষ্ট বিচার চেয়ে লোনা চিরান বিজ্ঞ আদালতে রিলিপ ম্রং সহ ১০সহ অজ্ঞাত আরো ৫ জনের নামে একটি মামলা তায়ের করেন।
তিনি বলেন, আমাদের ওপর হামলা করে ঘরবাড়ি ভেঙে নিয়েছে। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানাই।
তবে এ ঘটনা অস্বীকার করেছেন প্রতিপক্ষ রিলিপ ম্রং। তিনি বলেন, তাদের সাথে টাকা লেনদেন নিয়ে বিরোধে মারামারি হয়েছে।
ঘটনাটির সত্যতা নিশ্চিত করে সাবেক উপজেলা ট্রাইবাল ওয়েল ফেয়ার এসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান সূশীল নকরেক বলেন, বিষয়টি আমরা জানি। কিন্তু আমাদের কথা মানছে না। আমরাও এ ঘটনার বিচার চাই।
সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবু রায়হান বাবুল বলেন, কয়েকজন সুবিধাবাদী লোক নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য ওই আদিবাসী নারীর বাড়িতে হামলা করে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করেছে।