অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের আজ প্রথম পর্ব
বান্দরবান প্রতিনিধি : আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে বিগত ১৫বছর যাবত বান্দরবানে দূর্নীতির আশ্রয় নিয়ে শত শত কোটি টাকা আত্মসাৎ করায়,সাবেক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং ও তার স্ত্রী মেহ্লাপ্রু মারমাসহ মোট ৩২জনের বিরুদ্ধে দূর্ণীতির অভিযোগ এনে বান্দরবান জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিনের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা ও দূদকের চেয়ারম্যানের কাছে স্মারক লিপি দিয়েছেন জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি অধ্যাপক মো: ওসমান গণি।
বৃহস্পতিবার (৫সেপ্টেম্বর) দুপুরে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সাচিং প্রু জেরীর নির্দেশে এ স্মারক লিপি দেয়া হয়।
দূর্নীতির তালিকায় অন্যান্যরা হচ্ছেন, বীর বাহাদুরের সমন্ধী সাবেক জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক লক্ষী পদ দাশ, ক্যাসা প্রু মারমা, মোজাম্মেল হক বাহাদুর, অমল কান্তি দাশ, সৌরভ দাশ শেখর, শামসুল ইসলাম, মাহাবুবুর রহমান, উজ্জ্বল কান্তি দাশ, অজিত কান্তি দাশ, তাপস দাশ, রাশেদ চৌধুরী, রাজু বড়ুয়া, মোঃ মহিউদ্দিন, শফি উল্লাহ, আবু তাহের কোম্পানি, অংসা থোয়াই মারমা, জহির উদ্দিন, আনিসুর রহমান সুজন, ফারুক চৌধুরী, কাঞ্চন জয় তংচঙ্গ্যা, মংওয়াই চিং মারমা, আবুল বাশার, উসাজাই, সাইদুল ইসলাম জুয়েল, জসিম উদ্দিন (ভাগিনা জসিম), কামাল হোসেন (লেস কামাল) প্রদিপ কান্তি দাশ, বিজয় আইচ এবং ওসমান গণি বাদশা।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, বিগত স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের আমলে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী
বীর বাহাদুর উশৈসিং ২০০৯ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান, ২০১৪ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী ও ২০১৮ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এসময় তিনি তার নিজ সংসদীয় আসন বান্দরবান জেলাকে দুর্নীতির সর্বোচ্চ আসনে পরিণত করেন।
তার নেতৃত্বে ভূমি দখল, নিজ মালিকানাধীন রিসোর্ট,বাড়ী ও পর্যটন কেন্দ্রে জেলা পরিষদ,পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডসহ বিভিন্ন দপ্তর থেকে সরকারি অর্থ ব্যয়ে রাস্তা ও অনেক রকমের অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়। এছাড়াও নিজের মালিকানাধীন জায়গায় সরকারি রাস্তা স্থাপন করেন যা নজির বিহীন। বান্দরবান বিশ্ব বিদ্যালয় নামে নিজ মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের জন্য প্রায় ৬শ একর সরকারী জমি আত্মসাৎ করেছেন। ব্যক্তি মালিকানাধীন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে বরাদ্ধ নিয়েছেন প্রায় ৫০ কোটি টাকা। বান্দরবান পার্বত্য জেলার কাঠ ব্যবসায়ী, ইটভাটা, বনবিভাগ থেকে প্রদেয় পারমিট ইত্যাদি থেকে প্রতিমাসে নির্দিষ্ট চাঁদাও আদায় করতেন। সরকারের উনয়নমূলক প্রতিটি প্রতিষ্ঠান থেকে তার নিম্নোক্ত ব্যক্তিবর্গের মাধ্যমে প্রতিটি টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ করতেন ।
আরো উল্লেখ করা হয়েছে, ১৫ বছরে সরকারি,বেসরকারি সিংহভাগ বরাদ্দের বেশির ভাগ অর্থই তার আশীর্বাদপুষ্টদের দিয়ে লুটপাটের রাজ্যে পরিণত করেছেন। যার ফলশ্রুতিতে বহু সংখ্যক ভুঁইফোড় ও কোটিপতি জন্ম নিয়েছে। আমরা দ্ব্যর্থহীন ভাবে বলতে পারি এই সকল কর্মকাণ্ডের প্রধান পৃষ্ঠ পোষক ও নায়ক হচ্ছে বান্দরবান থেকে সাতবারের সংসদ সদস্য বীর বাহাদুর উশৈসিং। এছাড়াও উল্লেখযোগ্য যে, মন্ত্রীর সমন্ধী পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা মারমা কর্তৃক
চাকরি ও বদলি বাণিজ্যসহ কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচির জন্য বরাদ্দকৃত প্রায় ৭০০ কোটি টাকার গম আত্মসাৎ, ভূমি দখলসহ শত শত কোটি টাকা লুটপাট করেন। তাদের অবৈধ কাজের সহযোগী উল্লেখিত ব্যক্তিরা শূন্য থেকে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যান। তাদের সম্পদের হিসাব এবং আয়ের উৎস দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কর্তৃক তদন্ত করলে প্রমাণিত হবে।
স্মারক লিপি প্রদানের সময় আরো উপস্থিত ছিলেন বান্দরবান জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মো: আবদুল মাবুদ, সাবেক ছাত্রদল ও সাবেক স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি সাবিকুর রহমান জুয়েলসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও ছাত্ররা।