1. admin@weeklyjagrotojanata.com : admin :
বেনাপোল পৌরসভার সুপেয় পানির সংযোগে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ - জাতীয় সাপ্তাহিক জাগ্রত জনতা
মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:২৮ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :

বেনাপোল পৌরসভার সুপেয় পানির সংযোগে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ

জাগ্রত জনতা ডেস্ক :
  • প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৪

শার্শা উপজেলা প্রতিনিধি: জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর কর্তৃক ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট ও ওভারহেড ট্যাংক নির্মাণে বেনাপোল পৌর এলাকার ২৪ কিলোমিটার নতুন পাইপলাইন সম্প্রসারণ ও পানির মিটার স্থাপনকাজে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ মিলেছে।

বেনাপোল পৌরসভার ২, ৩, ৪, ৫ ও ৭নং ওয়ার্ডবাসীর অভিযোগ, চলমান প্রকল্পের কাজে নিন্মমানের পাইপ ও নির্মাণসসামগ্রী ব্যবহার, নতুন ও পুরাতন পাইপের মিশ্রণে পানির মেইন লাইন টানা, পানির নতুন সংযোগ প্রদানে দলীয়করণ, পানির সংযোগলাইন সরবারহে পৌর কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রচারনা করা এবং সংযোগ নিতে অবৈধ্য অর্থ আদায় করা হয়েছে।

পৌরবাসীর এমন অভিযোগের সদুত্তর দিতে পারছে না পৌর কর্তৃপক্ষ, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এমনকি জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের শার্শা অফিসের কর্মকর্তারা। একে অপরকে দোষারোপ করলেও এখনো হদিস মেলেনি পাইপলাইনের সংযোগপ্রত্যাশীদের কাছ থেকে উত্তোলিত অর্থের ঠিকানা। তবে কি এই অর্থ লোপাট হয়েছে? এ কাণ্ডে কারা জড়িত- এমন প্রশ্ন এখন জনমনে।

বেনাপোল পৌরবাসীর সুপেয় পানি সরবারহের উদ্দেশ্যে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সার্বিক তত্ত্বাবাধনে ২২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন ওয়াটার হেড ট্রিটমেন্ট প্লান্ট প্রকল্প কাজের সিডিউল মোতাবেক পৌর এলাকার বাসিন্দারা বিনামূল্যে পানির সংযোগ পাওয়ার কথা থাকলেও ইতোমধ্যে সংযোগপ্রাপ্ত গ্রাহকদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেয়া হয়েছে ৩০০ থেকে ৪ হাজারের অধিক টাকা। সাথে নেয়া হয়েছে জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি। এমনকি পানির লাইনের সংযোগ দেয়ায় স্বেচ্ছাচারিতা ও স্বজনপ্রীতির দোষে দুষ্ট পৌর প্রশাসন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে বেনাপোল পৌরসভার পানি শাখার দায়িত্বরত পাম্প চালক ওসমান গণি ও জাহিদুল ইসলামের সাথে কথা বললে সংযোগ পাওয়া গ্রাহকের কাছ থেকে টাকা নেয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে তারা জানান, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি মহসিন, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অফিসের মান্নান ও সাবেক মেয়রের প্রতিনিধি জামাল সংযোগপ্রাপ্তদের কাছ থেকে টাকা উত্তোলন করেছেন। নতুন পানির লাইনের সংযোগ কতজন গ্রাহক পেয়েছেন- এমন প্রশ্নে তারা জানান, এ পর্যন্ত এক হাজারের অধিক গ্রাহককে সংযোগ দেয়া হয়েছে।

পৌরবাসীর অভিযোগ সত্য বলে বেনাপোল পৌরসভার ৫নং (দীঘিরপাড়) ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর আজিম উদ্দীন গাজী জানান, নতুন পানির লাইন সংযোগ প্রদান ও টাকা উত্তোলনের বিষয়ে তৎকালীন পৌর পরিষদে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। কাউন্সিলরাও গ্রাহকদের কোনো তালিকা দেননি। প্রায় ৫-৬ হাজার বাড়ি থেকে জামাল নামে এক ব্যক্তি ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা করে গ্রহণ করার কথা শোনামাত্রই আমি বিষয়টি নিয়ে পরিষদ সভায় প্রতিবাদ জানাই।

অভিযোগের বিষয়ে প্রকল্পের কাজে নিয়োজিত শামিম অ্যান্ড সুমন ইঞ্জিনিয়ার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক রনির সাথে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি জানান, ওই দুই নামে বেনাপোল পৌর এলাকায় আমার কোনো প্রতিনিধি নেই। পানির লাইনের সংযোগ দিতে টাকা নেয়ার কোনো সুযোগ নেই। বিষয়টি এখনই আমি পৌরসভার প্রকৌশলীকে অবহিত করছি।

অভিযোগের বিষয়ে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের শার্শা অফিসের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. নুর ইসলাম জানান, গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা উত্তলোনের অভিযোগ শুনেছি। পৌর কর্তৃপক্ষের সাথে এ বিষয়ে কথা বলেছি। তারা জানিয়েছে টাকা ও এনআইডি কার্ডের ফটোকপি পৌরসভায় জমা আছে।

বিষয়টি নিশ্চিতে বেনাপোল পৌরসভার সচিব সাইফুল ইসলামের সহিত মুঠোফোনে কথা বললে তিনি জানান, এ সংক্রান্তে কোনো কাগজপত্র বা অর্থ পৌরসভার তহবিলে জমা নেই। এমনকি পানির লাইনের সংযোগ বাবদ গ্রাহদের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের সিদ্ধান্ত গ্রহণ সম্পর্কে তিনি জ্ঞাত নন।

উল্লেখ্য, ২২ কোটি টাকা ব্যয়ে সাড়ে ৪ লাখ লিটার ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন বেনাপোল পৌরসভার ২৪ কিলোমিটার এলাকায় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর কর্তৃক ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট ও ওভারহেড ট্যাংক নির্মাণকাজ শুরু হয়, যা এখনো চলমান। যেটা বেনাপোল পৌর ট্রাক টার্মিনালের জায়গায় নির্মাণ করা হচ্ছে। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে এ প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। সম্পূর্ণ কাজ শেষে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর এটি বেনাপোল পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করবে।

তবে নির্মাণে বিপুল পরিমাণ এই অর্থ কোথায় খরচ হচ্ছে, সেটাও খতিয়ে দেখার দাবি জানিয়েছে বেনাপোল সচেতন নাগরিক সমাজ।

Facebook Comments Box
এই ক্যাটাগরির আরও খবর