বিশেষ প্রতিনিধি মোংলা : বাংলাদেশ বর্তমানে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা করতে এক সংকটময় অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। সুন্দরবন ও উপকূলীয় বাস্তুতন্ত্রের ওপর এই পরিবর্তনের প্রভাব ক্রমেই গভীর হচ্ছে। শুক্রবার (২২ নভেম্বর) বিকেল ৩টায় মোংলার দক্ষিণ কাইনমারিতে জলবায়ু ন্যায্যতা এবং সুন্দরবন উপকূলের প্রাণ-প্রকৃতি ও জীবন-জীবিকা সুরক্ষা” শীর্ষক এক গণসংলাপে বক্তারা এই বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
গণসংলাপের আয়োজক সংগঠন ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) সুন্দরবন রক্ষায় আমরা ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ এবং পশুর রিভার ওয়াটারকিপার। সংলাপে সভাপতিত্ব করেন পশুর রিভার ওয়াটারকিপারের সমন্বয়কারী মোঃ নূর আলম শেখ। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার আফিয়া শারমিন।
বক্তারা বলেন, সুন্দরবনের ক্ষতিসাধনকারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিশ্চিত না হওয়ায় পরিবেশগত বিপর্যয় আরও ত্বরান্বিত হচ্ছে। পরিবেশের সুরক্ষা ও জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবিলায় সরকারের পাশাপাশি স্থানীয় জনগোষ্ঠীকেও সচেতন ভূমিকা রাখতে হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার আফিয়া শারমিন বলেন, “বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনে ভূমিকা না রাখলেও এর বিপর্যয় মোকাবিলা করতে হচ্ছে। আমাদের জীবনধারা ও লাইফস্টাইলে পরিবর্তন আনতে হবে।
জেলে সমিতির নেতা বিদ্যুৎ মন্ডল অভিযোগ করেন, সুন্দরবন ও পশুর নদীতে মাছের সংকট প্রকট হয়ে উঠেছে, যা নদী দূষণ এবং অবৈধ শিকারজনিত সমস্যার ফল। নারী নেত্রী চন্দ্রিকা মন্ডল বলেন, স্বাভাবিক জোয়ারেও উপকূলীয় ঘরবাড়ি তলিয়ে যাচ্ছে। স্বপ্না বিশ্বাস উপকূলীয় অঞ্চলে সুপেয় পানির সংকট এবং লবণাক্ততার কারণে কৃষি উৎপাদন শূন্যের কোঠায় নেমে আসার বিষয়টি তুলে ধরেন।
সভাপতির বক্তব্যে মোঃ নূর আলম শেখ বলেন, “সুন্দরবন ধ্বংসকারী প্রকল্পগুলো বাতিল করতে হবে। বন্যপ্রাণী অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে হবে। উপকূলীয় জনগোষ্ঠীর জন্য সুপেয় পানি সরবরাহ নিশ্চিত এবং হাওড় অঞ্চলের মতো সুন্দরবনের জন্য একটি উন্নয়ন বোর্ড গঠন করতে হবে।
বক্তারা আরও উল্লেখ করেন, জীবাশ্ম জ্বালানির বিকল্প হিসেবে নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসার ঘটানো জরুরি। গণসংলাপে পরিবেশ বিষয়ক পুঁথিপাঠ করেন গায়ক মোল্লা আল মামুন, যা উপস্থিতদের মধ্যে পরিবেশ সচেতনতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে।
বক্তারা সুন্দরবনসহ উপকূলীয় অঞ্চলের বাস্তুতন্ত্র রক্ষায় সরকারি এবং বেসরকারি উদ্যোগের সমন্বিত প্রয়াসের আহ্বান জানান।