টঙ্গী গাজীপুর প্রতিনিধিঃ টঙ্গীর উত্তর আরিচপুর কো-অপারেটিভ ব্যাংক মাঠ বস্তির মাদকসম্রাজ্ঞী ময়না বেগম। তিনি সৈরাচার সরকারের আওয়ামী রাজনীতির সাথে জরিত গাজীপুর মহানগর ৫৬ নম্বর ওয়ার্ড মহিলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন।
তার বিরুদ্ধে থানায় রয়েছে একাধিক মাদক মামলা। বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রাইভেট কার ও মোটরসাইকেল করে প্রতিদিন সকাল থেকে রাতে ময়না বেগমের কাছে আসেন মাদকসেবীরা। পুলিশের গ্রেপ্তার এড়াতে ময়না বেগম মাদকের চালান এনে তা বুঝিয়ে দেন তার একাধিক বিক্রেতার (সেলসম্যান এর কাছে। ফলে বিভিন্ন সময় পুলিশের অভিযানে মাদকসহ ময়নার সহযোগীরা গ্রেপ্তার হলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যান এই কথিত নেত্রী ময়না।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ময়না বেগমের পুরো পরিবার মাদক ব্যবসায় জড়িত। তার মেয়ে নার্গিস প্রশাসনের তালিকাভুক্ত অন্যতম শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় রয়েছে অন্তত এক ডজন মাদক মামলা। একাধিকবার র্যাব ও পুলিশের হাতে বিপুল পরিমাণ মাদকসহ গ্রেপ্তার হন ময়নার মেয়ে নার্গিস।
ময়না বেগমের ভাই শফিকুল ইসলাম টেকনাফ থেকে ইয়াবার চালান আনতে গিয়ে কক্সবাজার পুলিশের হাতে ৬ হাজার ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার হন। এই মামলায় ২৬ মাস জেল খাটেন। এরপর জামিনে বের হয়ে ফের ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকায় বিপুল পরিমাণ ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার হন শফিকুল পরে ঢাকার কেরানীগঞ্জ জেল হাজত থেকে বের হয়ে আবারও পুরোদমে শুরু করে ব্যবসা।
কো-অপারেটিভ ব্যাংক মাঠ বস্তির বিভিন্ন পয়েন্টে রয়েছে ময়না বেগমের বেতনভুক্ত পাহারাদার। প্রশাসন কিংবা সন্দেহভাজন কোনো লোকজন বস্তিতে প্রবেশ করলে সেই খবর পৌঁছে যায় মাদক কারবারি নেত্রী ময়নার কাছে।
ময়না বেগমের মাদক বিক্রির জন্য সেলার হিসেবে কাজ করেন রানী (৪০) ও রানীর ছেলে রাব্বানি (২৫)। গত কিছুদিন আগে কো-অপারেটিভ ব্যাংক মাঠ বস্তিতে ইয়াবা বিক্রির সময় ২০টি ইয়াবাসহ রাব্বানীকে গ্রেপ্তার করে টঙ্গী পূর্ব থানা পুলিশ।
ময়না বেগমের ছেলে তাজুল ইসলাম তাজু বস্তির অন্যতম মাদকের ডিলার।তাজুর শশুর সোলেমান ফরাজী এক সময় ঢাকায় রিক্সা চালালেও এখন কোটি টাকার মালিক।
তাজুর বউ রোজি বেগম এক সময় ট্রেনে হকারী করে পিঠা বিক্রি করলেও এখন কোটি টাকার স্বন অলংকার গরেছেন।ব্যাংকের মাঠের খুচরা মাদক ব্যাবসায়ীদের মাদক সাপ্লাই দেন এই রোজি।
ময়নার ছেলে তাজুর বিরুদ্ধেও রয়েছে একাধিক মামলা। ময়না ও তাজুল মাদকের টাকায় গাজীপুর ও মাদারীপুরে গড়ে তুলেছেন কয়েক কোটি টাকার সম্পদ। এসব সম্পদ নিজেদের নামে না কিনে আত্মীয়স্বজন ও শশুরবাড়ির লোকজনের নামে করেছেন।
টঙ্গীর শিলমুন জাম্বুরারটেক এলাকায় তাজুল ইসলাম তার শশুর সোলেমান ফরাজি (পক্কি)র নামে কিনেছেন ৮.৫৯ শতাংশ জমির ওপর নির্মিত একটি টিনশেড বাড়ি। মাদারীপুরের শিবচরের হিন্দুপাড়ায় রয়েছে কয়েক বিঘা জমি। অধিকাংশ সম্পদই তাজুল তার স্ত্রী মাদক কারবারি রোজির নামে কেনেন। এ ছাড়া গাজীপুর ও টঙ্গীতে রয়েছে নামে-বেনামে বিপুল সম্পদ।
ময়না বেগমের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে নিজে ও তার পরিবারের লোকজনের একসময় মাদক ব্যবসায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন তিনি।
ময়না বেগম বলেন, ‘আগে একসময় জড়িত ছিলাম। ১০-১২ বছর যাবৎ জড়িত নাই। আমার পরিবারের কেউ এখন মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত নই। আমার মেয়ে নার্গিস মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিল। সেও এখন মাদক ব্যবসা করে না। আর আমার ভাই কক্সবাজারে ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার হয়ে জামিনে বের হয়েছে।
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মো: গোলাম কিবরিয়া / বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ধীরেন্দ্র প্লাজা (৫ তলা), কলেজ গেইট, টঙ্গী, গাজীপুর। মোবাইলঃ 01785465360
Copyright © 2024 জাতীয় সাপ্তাহিক জাগ্রত জনতা. All rights reserved.